Site icon Krishibid Properties Limited

ব্যাংক কী দেখে ফ্ল্যাট লোন দেয়? এই ৩টি শর্ত জানলে অবাক হবেন!

ব্যাংক কী দেখে ফ্ল্যাট লোন দেয়

ব্যাংক কী দেখে ফ্ল্যাট লোন দেয়

ফ্ল্যাট লোন বা হোম লোন কী?

বর্তমানে নগর জীবনে ফ্ল্যাট মালিক হওয়া অনেকের স্বপ্ন। কিন্তু একসাথে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ফ্ল্যাট কেনা সম্ভব হয় না সবার পক্ষে। এখানেই সহায়তা করে ফ্ল্যাট লোন বা হোম লোন

সহজভাবে বলতে গেলে, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একটি বড় অঙ্কের টাকা ধার দেয় ফ্ল্যাট কেনার জন্য। এরপর আপনাকে মাসিক কিস্তি (EMI) আকারে সুদসহ সেই টাকা ফেরত দিতে হয়।

কেন মানুষ ব্যাংক থেকে ফ্ল্যাট লোন নেয়

ব্যাংক কী দেখে ফ্ল্যাট লোন অনুমোদন করে?

এবার আসল প্রশ্ন—ব্যাংক কী দেখে ফ্ল্যাট লোন দেয়? মূলত তিনটি বিষয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়।

প্রথম শর্ত – আয়ের উৎস ও চাকরির স্থায়িত্ব

ব্যাংক সর্বপ্রথম দেখে আপনার আয়ের উৎস কতটা নির্ভরযোগ্য

বেতন ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট যাচাই

ব্যাংক আপনার শেষ ৬ মাস থেকে ১ বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট পরীক্ষা করে। এতে তারা বুঝতে পারে আপনার আয়ের নিয়মিততা কেমন।

দ্বিতীয় শর্ত – ক্রেডিট হিস্ট্রি বা CIB রিপোর্ট

বাংলাদেশে প্রতিটি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের CIB (Credit Information Bureau) রিপোর্ট দেখে।

ডিফল্টার হলে কী সমস্যা হয়

যদি কারো নামে পুরনো লোন বাকি থাকে, তাহলে নতুন ফ্ল্যাট লোন প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। এজন্য পুরনো ঋণ শোধ করা জরুরি।

তৃতীয় শর্ত – সম্পত্তির বৈধ কাগজপত্র

ব্যাংক শুধু আয়ের উৎস নয়, ফ্ল্যাটের কাগজপত্রও খুঁটিয়ে দেখে।

কাগজপত্র যাচাইয়ে ব্যাংকের ভূমিকা

প্রায় সব ব্যাংক আইনজীবীর মাধ্যমে জমির দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করে। সব কিছু পরিষ্কার থাকলেই লোন অনুমোদন পায়।

ফ্ল্যাট লোনের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া

ব্যাংক থেকে ফ্ল্যাট লোন নেওয়ার জন্য কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এটি সাধারণত সহজ হলেও সঠিক কাগজপত্র ও প্রস্তুতি থাকলে সময় বাঁচে।

  1. আবেদনপত্র পূরণ – নির্দিষ্ট ব্যাংকের হোম লোন ফরম পূরণ করতে হয়।

  2. কাগজপত্র জমা – জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি, আয়ের প্রমাণপত্র ও জমির কাগজপত্র জমা দিতে হয়।

  3. প্রাথমিক যাচাই – ব্যাংক প্রথমে আপনার আয়ের উৎস যাচাই করে।

  4. CIB রিপোর্ট সংগ্রহ – বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ক্রেডিট রিপোর্ট চাওয়া হয়।

  5. সম্পত্তির কাগজপত্র পরীক্ষা – ব্যাংকের আইনজীবী কাগজপত্র যাচাই করে।

  6. লোন অনুমোদন – সব কিছু ঠিক থাকলে ব্যাংক লোন অনুমোদন দেয়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা

ফ্ল্যাট লোনের জন্য সাধারণত যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন হয়:

লোন প্রক্রিয়াকরণের সময়সীমা

ব্যাংকের দেওয়া লোনের পরিমাণ ও সুদের হার

ব্যাংক কত টাকা লোন দেবে তা নির্ভর করে আপনার আয় ও কাগজপত্রের ওপর

বাংলাদেশে হোম লোনের বর্তমান সুদের হার

বাংলাদেশে বর্তমানে বেশিরভাগ ব্যাংকের হোম লোনের সুদের হার:

ব্যাংকের নাম সুদের হার (প্রায়)
সোনালী ব্যাংক ৯% – ১০%
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ৯.৫% – ১০%
ব্র্যাক ব্যাংক ১০% – ১১%
এইচএসবিসি ৯% – ১০%
প্রাইম ব্যাংক ৯.৫% – ১১%

👉 বাংলাদেশ ব্যাংক ওয়েবসাইটে গিয়ে আপডেটেড সুদের হার দেখা যায়।

ফ্ল্যাট লোন পেতে আপনার করণীয় টিপস

লোন দ্রুত অনুমোদনের জন্য কিছু কার্যকর টিপস:

আয়ের স্থিতিশীলতা বাড়ানো

ক্রেডিট স্কোর উন্নত করা

কাগজপত্র আগেভাগে প্রস্তুত রাখা

ফ্ল্যাট লোনের সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা

অসুবিধা

বাংলাদেশে জনপ্রিয় ব্যাংকের ফ্ল্যাট লোন স্কিম

বাংলাদেশে বর্তমানে বেশ কয়েকটি ব্যাংক হোম লোন দিয়ে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

উপসংহার

সব মিলিয়ে বলা যায়, ব্যাংক কী দেখে ফ্ল্যাট লোন দেয়—এই প্রশ্নের উত্তর দাঁড়ায় মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর:
1️⃣ আপনার আয়ের উৎস ও চাকরির স্থায়িত্ব
2️⃣ আপনার ক্রেডিট হিস্ট্রি (CIB রিপোর্ট)
3️⃣ ফ্ল্যাট বা জমির বৈধ কাগজপত্র

এই তিনটি শর্ত পূরণ করতে পারলে লোন অনুমোদন পাওয়া তুলনামূলক সহজ হয়। সঠিক পরিকল্পনা, সঠিক ব্যাংক নির্বাচন, এবং পরিষ্কার কাগজপত্র থাকলে আপনার নিজের ফ্ল্যাট কেনার স্বপ্ন আর দূরের নয়।

Exit mobile version